সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪০ অপরাহ্ন
সরাইল (ব্রাক্ষণবাড়িয়া) প্রতিনিধি, কালের খবর :
চরম অনিয়মের মধ্যেই চলছে সরাইল-অরুয়াইল হাট সড়কটির সংস্কার কাজ। ২৪ পারসেন্ট লেস দিয়ে কাজ নিয়েছেন ঠিকাদার। তাই ৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকার কাজে চলছে লেপপোজ। দেদারছে ব্যবহার হচ্ছে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী। সড়ক প্রতিরক্ষা দেয়ালের গোড়া থেকে ভেকু দিয়ে কাটা হচ্ছে মাটি। মাটিতে শুয়ে পড়ে ঠিকাদারের কাজের অনিয়মের প্রতিবাদ করেছেন স্থানীয় লোকজন। স্থানীয় লোকজন ও উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্র জানায়, সরাইল-অরুয়াইল সড়কের চুন্টা এলাকার ঘাগড়াজোর ব্রিজ থেকে ভূঁইশ্বর বাজার পর্যন্ত সড়কটির ২ দশমিক ৪ কিলোমিটার অংশের বেহাল দশা দীর্ঘদিন ধরে। অসংখ্যবার উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় সড়ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একাধিক জাতীয় পত্রিকায় দুর্দশার সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সংস্কারের দাবিতে পালিত হয়েছে মানববন্ধন কর্মসূচি।
অবশেষে প্রাক্কলিত ব্যয় ৪ কোটি ৪৫ লাখ ৮৯ হাজার ১১৪ টাকা অনুমোদন হয়। দরপত্র আহ্বান করেন কর্তৃপক্ষ। ২৪ পারসেন্ট লেস দিয়ে টেন্ডার ড্রপ করে কাজ পান আইবিজেভিএসএআরকেএআরসি নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যা প্রাক্কলিত ব্যয় থেকে ১ কোটি ১২ লাখ ২০৫ টাকা। ১৮০ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে কাজ। এপ্রিলের প্রথম থেকে শুরু করেছেন কাজ। তড়িঘড়ি এই কাজের নামে চলছে জোড়াতালি আর লেপপোজ। সড়কে দেদারছে পড়ছে নিম্নমানের কংক্রিট। সড়কের প্রতিরক্ষা দেয়ালের ঠিক গোড়া থেকে ফসলি জমির মাটি ভেকু দিয়ে কেটে সড়কে দিচ্ছেন। ২ ও ৩ নম্বর ইটের কংক্রিট আর পুরাতন কার্পেটিং ঢালছেন। সড়কের ব্লক তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে মাটি মিশ্রিত বালি আকৃতির পাথর ও ভিটি মাটি। সড়কে বসানোর আগেই ফেটে/ ভেঙে যাচ্ছে ব্লক। ৯০ ভাগ জায়গায় এখনো বসানো হয়নি জিওটেক ও ব্লক। এরইমধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে হরহামেশা। পানি প্রতিরক্ষা দেয়াল ছুঁই ছুঁই। আর সামান্য পানি বৃদ্ধি পেলে দেয়াল টপকে সড়কের স্লোব তলিয়ে যাবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই এলাকার একাধিক দায়িত্বশীল জনপ্রতিনিধি বলেন, কাজে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে। এত কষ্টের সড়কে পুরাতন মালামাল ও পচা কংক্রিট কয়দিন টিকবে? হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। সহ্য করতে পারছি না। প্রতিবাদ করে কোন বিপদে পড়ি আতঙ্কে আছি।
এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদার মো. নুরুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। কাজটির তদারকি কর্মকর্তা (এসও) উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান মজুমদার নিম্নমানের কংক্রিট ব্যবহার ও প্রতিরক্ষা দেয়ালের গোড়া থেকে মাটি কাটার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি বাধা দিয়ে বাজে কংক্রিট ব্যবহার বন্ধ করেছি। ঠিকাদার লেসে কাজ নিয়েছেন। আর অনিয়ম করতে পারবেন না। নিয়মিত তদারকি করছি। সড়কের উপরের কাজ শেষ করে জিওটেক ও ব্লক বসাবে।